Desher Khabor
ঢাকারবিবার , ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  1. অপরাধ ও দুর্নীতি
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আর্ন্তজাতিক
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. খেলাধুলা
  7. জবস্
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. পড়াশোনা
  12. প্রবাসের খবর
  13. ফিচার
  14. বিনোদন
  15. ভিডিও
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জয়ের মৃত্যুতে কোল শূন্য মায়ের

madaripurbarta
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২ ১:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর ঠান্ডায় প্রাণ হারানো আরেক যুবক জয় তালুকদারের লাশ পবিরারের কাছে হস্তান্তর

জাহিদ হাসান:
অবৈধভাবে ইতালী যাওয়ার সময় ঝড়োবাতাসে প্রচন্ড ঠান্ডায় তিউনিউসিয়ার ভুমধ্যসাগরে প্রাণ হারায় বাংলাদেশের সাত যুবক। ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ২৯ জানুয়ারী এক জরুরী নোটিশের মাধ্যমে সাত জনের নাম জানা যায়। ৭ যুবকের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরে। এর মধ্যে একজন জয় তালুকদার রতন। শনিবার রাতে জয় তালুকদারের লাশ তার নিজ বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার বড়াইলবাড়ী গ্রামে পৌছায়। রবিবার সকালে জয়ের বসত ঘরের সামনে তাকে মাটি দেয়া হয়। হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী শ্মশানে শেষ কৃত্যের কথা থাকলেও মায়ের অনুরোধে তাকে দাফন করা হয়। মা লক্ষী তালুকদারের একমাত্র সন্তান জয়। স্বজনদের আহাজারীতে এলাকায় বইছে শোকের মাতন। গত শনিবার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ইমরান হাওলাদারকে। এ নিয়ে দুজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি তিন জনের লাশের অপেক্ষায় রয়েছে নিহতর স্বজনেরা। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে যে ৭ জনের নাম দেয়া হয়েছে তার মধ্যে কামরুল হাসান বাপ্পির বাড়ি শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায়। মাদারীপুরের জহিরুল মাতুব্বরের লাশ চলতি মাসেন ২০ তারিখ ও সাফায়েত মাতুব্বরের লাশ ২১ তারিখ পৌছাবে বলে জানা যায়। দালালের শাস্তিসহ অসহায় পরিবারের পাশে দাড়াবে সরকার এমনটাই দাবি স্বজন ও স্থানীয়দের।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, অবৈধভাবে ইতালী যাওয়ার সময় ঝড়োবাতাসে প্রচন্ড ঠান্ডায় তিউনিউসিয়ার ভুমধ্যসাগরে প্রাণ হারানো বাংলাদেশের সাত যুবকের নাম ২৯ জানুয়ারী এক জরুরী নোটিশের মাধ্যমে জানায় ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস । ৭ যুবকের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরে। নিহত হলো, মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পেয়ারপুর গ্রামের শাজাহান হাওলাদারের ছেলে ইমরান হোসেন, মস্তফাপুর ইউনিয়নের চতুরপাড় গ্রামের শাহাজালাল এর ছেলে জহিরুল, রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর এলাকার কাশেম মোল্লার ছেলে সাফায়েত, পেয়ারপুর ইউনিয়নের বড়াইলবাড়ি গ্রামের প্রেমানন্দ তালুকদারের ছেলে জয় তালুকদার রতন ও সদর উপজেলার বাপ্পী নামে এক যুবক। প্রথমে বাপ্পির বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলায় লেখা থাকলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে লাশ পৌছানোর যে তালিকা দেয়া হয়েছে তাতে কামরুল ইসলাম বাপ্পির বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলা উল্লেখ করা হয়েছে। নিহত ৫ জনের মধ্যে ইমরানের লাশ শুক্রবার ভোর রাতে মাদারীপুরে তার নিজ বাড়িতে পৌছায় । শনিবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ইমরানের লাশ। রবিবার সকালে জয় তালুকদার রতনের লাশ তার নিজ বাড়িতে মাটি দেয়া হয়। হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী জয়ের লাশ শ্মশানে শেষ কৃত্যের কথা থাকলেও জয়ের মা লক্ষী তালুকদারের অনুরোধে বসত ঘরের সামনেই মাটি দেয়া হয়। ছেলেকে চোখের সামনে রাখতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানায় স্বজনরা। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে ছিল প্রমানন্দ তালুকদারের (পলাশ) সংসার। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে লক্ষী তালুকদারকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। লক্ষী তালুকদারের একমাত্র সন্তান ছিল জয় তালুকদার। জয়ের মৃত্যুতে কোল শূন্য হয়ে গেছে লক্ষী তালুকদারের। সব স্বপ্ন-আশাই আজ ফিরে এসেছে কফিনে বন্ধী হয়ে। শান্তনার সব ভাষাই আজ মূল্যহীন। হারানোর বেদনা যেন পিছু ছাড়ছে না প্রেমানন্দকে। আনন্দ বাসা বাধেনি প্রেমানন্দের ঘরে। প্রথম স্ত্রী হারানো পরে বড় মেয়েও মারা যায় কয়েক বছর আগে সন্তান প্রসবের সময়। এত হারানোর বেদনায় প্রেমানন্দ আজ বাকরুদ্ধ। কোন কথা বলে না সে। শুধু এক দিকে তাকিয়ে থাকে অপলক। লাশ পেয়ে সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নিহতের স্বজনেরা। তবে দালালের শাস্তি দাবিসহ অসহায় পরিবারের পাশে থাকবে সরকার এমনটা আশা করে নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা।
স্থানীয় আল আমিন মৃধা বলেন, জয় খুব ভদ্র ছেলে ছিল। তার মৃত্যুতে এলাকার প্রতিটি লোক কষ্ট পেয়েছে। কোন ভাবেই ওর কথা ভুলতে পারছি না। আমরা এসব দালালদের বিচার চাই। সরকার যেন এ অসহায় পরিবারের পাশে থাকে সেটাই আমরা চাই।
নিহতের দাদি কানন তালুকদার বলেন, আমার ভাই নাই। ও আমার অনেক খেয়াল রাখতো, খেদমত করতো। এখন আমাকে দেখবে কে? আমি কেন ওর লাশ দেখলাম। মরার কথা আমার। ভগবান কেন আমায় এত কষ্ট দিল।
জয় তালুকদারের মা লক্ষী তালুকদারের বলেন, আমার কোল খালি হয়ে গেল। আমি কাকে নিয়ে বাচবো। আমার বাবা আর মা বলে ডাকবে না, এ কষ্ট কেমনে সইবো। ঘরের সামনে মাটি দিতে বলছি আমার বাবা যেন চোখের সামনে থাকে। আমি বাবারে ভুলতে চাই না, চোখের আড়াল করতে চাইনা।
নিহতের বাবা প্রেমানন্দ তালুকদার(পলাশ) বলেন, কষ্ট আমার পিছু ছাড়লো না। স্ত্রী, বড় মেয়ের শোক শেষ না হতেই আমার বাবায় চলে গেল। আমি কি করবো। এত শোক, দেনার চাপ নিয়ে বেচে থাকতে মন চায় না। আমার ভাগ্যে সুখ নাই। সরকার আর ভগবানই আমার ভরসা।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, জয় তালুকদারের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইমরান ও জয় দুজনের লাশ দেশে আসছে। আরও দুজনের লাশ এ মাসেই আসবে। দালালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকার অসহায় পরিবারের পাশে ছিল, পাশে থাকবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।